হাওর বার্তা ডেস্কঃ চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত আড়াই মাসে বিশ্বের দেড় শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কিছুটা কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে এর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ৯৮৪ জন। অপরদিকে ৮২ হাজার ৭৬২ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৯৮ হাজার ৪১২ জন।
এই ভাইরাসে শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৮৯৪ জন। আর মারা গেছেন ৩ হাজার ২৩৭ জন। তবে এখন চীনে এই হার উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনাভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ জন এবং নিহত হয়েছেন ১১ জন।
চীনের বাইরে ইতালিতে ভয়াবহ তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনাভাইরাস। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ হাজার ৫০৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৫০৩ জনের। ইতালির পরেই অবস্থান করছে ইরান। ইরানে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ১৬৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৯৮৮ জন। এতদিন ইরানের পর দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও নিহতের সংখ্যা ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার আক্রান্ত ও নিহতের দিক থেকে দক্ষিণ কোরিয়াকে টপকে গিয়েছে স্পেন ও জার্মানি।
স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৮৪ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৮২৬ জন। এছাড়া একদিনে নিহত হয়েছেন ১৯১ এবং মোট মৃতের সংখ্যা ৫৩৩ জন। এছাড়া জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২০৯৫ জন এবং নিহত হয়েছেন ৯ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৩৬৭ জন এবং মৃতের সংখ্যা ২৬ জন। দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮ হাজার ৪১৩ এবং মারা গেছে ৮৪ জন।
এছাড়া বাংলাদেশ, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, সিঙ্গাপুর, কুয়েত, বাহরাইন, যুক্তরাজ্যে, মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইজারল্যান্ডসহ ১৬৩টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ঠিক কীভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছিল- সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। তবে ধারণা করা হচ্ছে, উহানের একটি সি ফুড মার্কেটে কোনো প্রাণী থেকে এ ভাইরাস প্রথম মানুষের দেহে আসে। তারপর মানুষ থেকে ছড়াতে থাকে মানুষে।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।